Translate

শনিবার, ৬ জুলাই, ২০১৩

জুমার দিন আল্লাহ আদম (আ) কে সৃষ্টি করেন

আবূ হুরায়রা (রা) থেকে বর্ণিত: তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্‌ (ছ) আমার হাত ধরে বললেন, আল্লাহ্‌ তা’আলা শনিবার দিন মাটি সৃষ্টি করেন। রোববার দিন তিনি এতে পর্বত স্থাপন করেন। সোমবার দিন তিনি বৃক্ষরাজি পয়দা করেন। মঙ্গলবার দিন তিনি আপদ বিপদ সৃষ্টি করেন। বুধবার দিন তিনি নূর পয়দা করেন। বৃহস্পতিবার দিন তিনি যমীনে পশু-পাখি ছড়িয়ে দেন এবং জুম’আর দিন আসরের পর তিনি আদম (আ) কে সৃষ্টি করেন। অর্থাৎ জুম’আর দিনের সময়সমূহের শেষ মুহূর্তে সর্বশেষ মাখলুক আসর থেকে রাত পর্যন্ত সময়ের মধ্যবর্তী সময়ে তিনি সৃষ্টি করেছেন।
(সহীহ মুসলিম #৬৮৮৭)

বৃহস্পতিবার, ৪ জুলাই, ২০১৩

পরস্পরের মধ্যে ভালবাসা বৃদ্ধি করার উপায়


ইসলাম বলে, পরস্পরের মধ্যে ভালবাসা ও সৌহার্দ্য স্থাপিত না হলে পরিপূর্ণ ঈমানদার হওয়া যায় না, শান্তি ও নিরাপত্তা লাভ করা যায় না, এমনকি জান্নাতও লাভ করা যাবে না। তাই রাসূলুল্লাহ মুমিনদের পরস্পরের মধ্যে ভালবাসা ও সৌহার্দ্য বৃদ্ধির জন্য একটি চমৎকার পন্থা বাতলে দিয়েছেন। তিনি বলেন,..
‘‘তোমরা বেহেশতে প্রবেশ করতে পারবে না যতক্ষণ পর্যন্ত ঈমানদার না হবে, তোমরা ঈমানদার হতে পারবে না যতক্ষণ পর্যন্ত না পরস্পরের মধ্যে ভালবাসা ও সৌহার্দ্য স্থাপন করবে। আমি কি তোমাদেরকে এমন বিষয়ের কথা বলব না, যা করলে তোমাদের মধ্যে ভালবাসা ও সৌহার্দ্য প্রতিষ্ঠিত হবে ? সাহাবীগণ বললেন, নিশ্চয় ইয়া রাসূলাল্লাহ ! (তিনি বললেন) তোমাদের মধ্যে বহুল পরিমাণে সালামের প্রচলন কর।’’

(মুসলিম, কিতাবুল ঈমান, হাদিস নং ৮১)

ভীষণ সুন্দর একটি কাহিনী শুনলাম, শুনে চোখ দিয়ে পানি চলে আসল...

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের একজন সাহাবা, নাম থা’লাবা (Tha’laba, বাংলায় অনেক সময় সা’লাবা বলা হয়)। মাত্র ষোল বছর বয়স। রাসূল (সা) এর জন্য বার্তাবাহক হিসেবে এখানে সেখানে ছুটোছুটি করে বেড়াতেন তিনি। একদিন উনি মদীনার পথ ধরে চলছেন, এমন সময়
একটা বাড়ির পাশ দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় তাঁর চোখ পড়ল দরজা খুলে থাকা এক ঘরের মধ্যে। ভিতরে গোসলখানায় একজন মহিলা গোসলরত ছিলেন, এবং বাতাসে সেখানের পর্দা উড়ছিল, তাই থা’লাবার চোখ ঐ মহিলার উপর যেয়ে পড়ল। সঙ্গে সঙ্গে উনি দৃষ্টি নামিয়ে নিলেন।

কিন্তু থা’লাবার মন এক গভীর অপরাধবোধে ভরে গেল। প্রচন্ড দুঃখ তাকে আচ্ছাদন করল। তার নিজেকে মুনাফিক্বের মত লাগছিল। তিনি ভাবলেন, ‘কিভাবে আমি রাসূল (সা) এর সাহাবা হয়ে এতোটা অপ্রীতিকর কাজ করতে পারি?! মানুষের গোপনীয়তাকে নষ্ট করতে পারি? যেই আমি কিনা রাসূল (সা) এর বার্তা বাহক হিসেবে কাজ করি, কেমন করে এই ভীষণ আপত্তিজনক আচরণ তার পক্ষে সম্ভব?’ তাঁর মন আল্লাহর ভয়ে কাতর হয়ে গেল। তিনি ভাবলেন, ‘না জানি আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা আমার এমন আচরণের কথা রাসূল সা এর কাছে প্রকাশ করে দেয়!’ ভয়ে, রাসূল (সা) এর মুখোমুখি হওয়ার লজ্জায়, তিনি তৎক্ষণাৎ ঐ স্থান থেকে পালিয়ে গেলেন।

এভাবে অনেকদিন চলে গেল। রাসূল সাল্লাল্লাহু ওয়ালাইহি ওয়াসাল্লাম অন্যান্য সাহাবাদের কে থা’লাবার কথা জিজ্ঞেস করতেই থাকতেন। কিন্তু সবাই জানাল কেউ-ই থা’লাবা কে দেখেনি। এদিকে রাসূল সা এর দুশ্চিন্তা ক্রমেই বাড়ছিল। তিনি উমর (রা), সালমান আল ফারিসি সহ আরো কিছু সাহাবাদের পাঠালেন থা’লাবার খোঁজ আনার জন্য। মদীনা তন্ন তন্ন করে খুঁজেও থা’লাবার দেখা মিলল না। পরে মদীনার একেবারে সীমানাবর্তী একটা স্থানে, মক্কা ও মদীনার মধ্যখানে অবস্থিত পর্বতময় একটা জায়গায় পৌঁছে কিছু বেদুঈনের সাথে দেখা হল তাদের। দেখানে এসে তারা থা’লাবার সম্পর্কে খোঁজ খবর নিতে শুরু করলেন। ‘তোমরা কি লম্বা, তরুণ, কম বয়সী একটা ছেলেকে এদিকে আসতে দেখেছ?’

বেদুঈনগুলো মেষ চড়াচ্ছিল। তারা জবাব দিল, সে খবর তারা জানেনা, তবে তারা জিজ্ঞেস করল, ‘তোমরা কি ক্রন্দনরত বালকের সন্ধানে এসেছ?’ একথা শুনে সাহাবীরা আগ্রহী হয়ে উঠলেন এবং তার বর্ণনা জানতে চাইলেন। উত্তরে ওরা বলল, ‘আমরা প্রতিদিন দেখি মাগরিবের সময় এখানে একটা ছেলে আসে, সে দেখতে এতো লম্বা, কিন্তু খুব দুর্বল, সে শুধুই কাঁদতে থাকে। আমরা তাকে খাওয়ার জন্য এক বাটি দুধ দেই, সে দুধের বাটিতে চুমুক দেয়ার সময় তার চোখের পানি টপটপ করে পড়ে মিশে যায় দুধের সাথে, কিন্তু সেদিকে তার হুঁশ থাকেনা!’ তারা জানালো চল্লিশ দিন যাবৎ ছেলেটা এখানে আছে। একটা পর্বতের গুহার মধ্যে সে থাকে, দিনে একবারই সে নেমে আসে, কাঁদতে কাঁদতে; আবার কাঁদতে কাঁদতে, আল্লাহর কাছে সর্বদা ক্ষমা প্রার্থনা করতে করতে উপরে চলে যায়।

সাহাবারা বর্ণনা শুনেই বুঝলেন, এ থা’লাবা না হয়ে আর যায় না।
তবে তাঁরা উপরে যেয়ে থা’লাবা ভড়কে দিতে চাচ্ছিলেন না, এজন্য নিচেই অপেক্ষা করতে লাগলেন।

যথাসময়ে প্রতিদিনের মত আজও থা’লাবা ক্রন্দনরত অবস্থায় নেমে আসলেন, তাঁর আর কোনদিকে খেয়াল নাই। কী দুর্বল শরীর হয়ে গেছে তাঁর! বেদুঈনদের কথামত তাঁরা দেখতে পেলেন, থা’লাবা দুধের বাটিতে হাতে কাঁদছে, আর তাঁর অশ্রু মিশে একাকার হয়ে যাচ্ছে। তাঁর চেহারায় গভীর বিষাদের চিহ্ন স্পষ্টভাবে প্রকাশ পাচ্ছে।

সাহাবারা তাকে বললেন, ‘আমাদের সাথে ফিরে চল’; অথচ থা’লাবা যেতে রাজি হচ্ছিলেন না। তিনি বারবার সাহাবাদেরকে জিজ্ঞেস করতে লাগলেন, ‘আল্লাহ কি আমার মুনাফেক্বী বিষয়ক কোন সূরা নাযিল করেছে?’

সাহাবারা উত্তরে বললেন, ‘না আমাদের জানামতে এমন কোন আয়াত নাযিল হয় নাই।’

উমর (রা) বললেন, রাসূল (সা) আমাদেরকে তোমাকে নিয়ে যাওয়ার জন্য পাঠিয়েছেন। তুমি যদি এখন যেতে রাজি না হও, তাহলে তোমাকে আমরা জোর করে ধরে নিয়ে যাব। রাসূল (সা) এর কথা অমান্য করবেন এমন কোন সাহাবা ছিল নাহ। কিন্তু থা’লাবা এতোটাই লজ্জিত ছিলেন যে ফিরে যেতে চাচ্ছিলেন নাহ। এরপর সাহাবারা তাকে রাসূল (সা) এর কাছে মদীনায় নিয়ে আসেন।

মহানবী (সা) এর কাছে এসে থা’লাবা আবারও একই প্রশ্ন করে, ‘আল্লাহ কি আমাকে মুনাফিক্বদের মধ্যে অন্তর্গত করেছেন অথবা এমন কোন আয়াত নাযিল করেছেন যেখানে বলা আমি মুনাফিক্ব?’ রাসূল (সা) তাকে নিশ্চিত করলেন যে এমন কিছুই নাযিল হয়নি। তিনি থা’লাবার দুর্বল পরিশ্রান্ত মাথাটা নিজের কোলের উপর রাখলেন। থা’লাবা কাঁদতে কাঁদতে বলে উঠলেন, ‘হে আল্লাহর রাসূল, এমন গুনাহগার ব্যক্তির মাথা আপনার কোল থেকে সরিয়ে দিন।’ উনার কাছে মনে হচ্ছিল যেন সে এসব স্নেহের যোগ্য নাহ।

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে সান্ত্বনা দিতেই থাকলেন। আল্লাহর রহমত আর দয়ার উপর ভরসা করতে বললেন। আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইতে বললেন। এমন সময় থা’লাবা বললেন,

‘হে আল্লাহর রাসূল আমার এমন মনে হচ্ছে যেন আমার হাড় আর মাংসের মাঝখানে পিঁপড়া হেঁটে বেড়াচ্ছে।’

রাসূল (সা) বললেন, ‘ওটা হল মৃত্যুর ফেরেশতা। তোমার সময় এসেছে থা’লাবা, শাহাদাহ পড়’।

থা’লাবা শাহাদাহ বলতে থাকলেন, ‘আল্লাহ ছাড়া ইবাদাতের যোগ্য আর কোন ইলাহ নেই, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর রাসূল’
উনি শাহাদাহ বলতে থাকলেন... বলতেই থাকলেন... এমনভাবে তাঁর রুহ শরীর থেকে বের হয়ে গেল।
* * *
মহানবী (সা) থা’লাবাকে গোসল করিয়ে জানাজার পর কবর দিতে নিয়ে যাচ্ছিলেন। আরো অনেক সাহাবা থা’লাবাকে বহন করে নিয়ে যাচ্ছিলেন। মহানবী (সা) পা টিপে টিপে অনেক সাবধানে এগিয়ে যাচ্ছিলেন। উমর রাদিয়ালাহু আনহু অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলেন, ‘হে আল্লাহর রাসূল, আপনি এভাবে কেন হাঁটছেন যেন ভিড়ের মাঝে হেঁটে চলেছেন.. কতো রাস্তা ফাঁকা পরে আছে, আপনি আরাম করে কেন চলছেন না ইয়া রাসুল?’

উত্তরে রাসূল (সা) বললেন, ‘হে উমর, আমাকে অনেক সাবধানে চলতে হচ্ছে। সমস্ত রাস্তা ফেরেশতাদের দ্বারা ভরে গেছে । থা’লাবার জন্য এতো ফেরেশতা এসেছে যে আমি ঠিকমত হাঁটার জায়গা পাচ্ছি না’।

সুবহান আল্লাহ !

এই সেই থা’লাবা যে ভুলক্রমে একটা ভুল করার জন্য এতো প্রায়শ্চিত্য করেছেন। গুনাহ-র কাজ করা তো দূরের কথা, গুনাহ না করেও আল্লাহর কাছে ক্ষমা চেয়ে চেয়ে ব্যাকুল হয়েছেন। কত উঁচু ছিলেন তিনি আল্লাহর চোখে যে তাকে নেয়ার জন্য ফেরেশতাদের আগমনে রাস্তা ভরে গিয়েছিল! এই সব ফেরেশতারা নেমে এসেছে শুধু থা’লাবার জন্য, তাঁর জন্য দুআ করার জন্য, তাকে নিয়ে যাবার জন্য। আর আমরা সারাদিন জেনে না জেনে এতো ভুল করেও, এতো গুনাহ করেও অনুশোচনা করি না! উলটা আমাদের পছন্দ মত কিছু না হলেই আল্লাহর আদেশের উপর অসন্তোষ প্রকাশ করতে থাকি, জীবন নিয়ে নালিশ করতে থাকি।

একটা হাদীস আছে, ‘মু’মিন বান্দার কাছে তার গুনাহগুলো এমন যেন এখনই পাহাড় ভেঙ্গে তার মাথার উপর পড়বে; আর একজন দুর্বৃত্তকারীর কাছে গুনাহ এরকম যে মাছি এসে তার নাকের উপর উড়াউড়ি করছে, আর সে হাত নাড়িয়ে সেটা সরিয়ে দিল’।

[বুখারি, বইঃ৭৫, হাদীস নং ৩২০]

আমরা আমাদের গুনাহগুলোকে দেখেও না দেখার ভান করি। স্বীকার করতে চাইনা। কতো রকম যুক্তি দিয়ে জাস্টিফাই করার চেষ্টা করি। একটু ফ্যাশন, শখ, মনের ইচ্ছা পূরণ, মানুষের সামনে বড় হওয়া, যুগের সাথে তাল মিলিয়ে চলার জন্য আমরা গুনাহ-র কাজে জড়িয়ে পরি। কিন্তু আল্লাহর কাছে বিনয়ের সাথে ক্ষমা চাওয়ার কথা ভাবতে পারিনা। আমাদের যুক্তি, অহংকার, শয়তানের মতই আমাদেরকে ক্ষমা প্রার্থনা থেকে বিরত রাখে। কিয়ামতের দিন এক আল্লাহর রহমত আর দয়া ছাড়া কিছুই আমাদেরকে আগুন থেকে বাঁচাতে পারবে না। জান্নাত তাদের জন্যই যারা আল্লাহর কাছে মাথা নত করে। আত্মসমর্পণ করে পূর্ণভাবে। নিজের ইচ্ছা, অহম বোধের কাছে মাথা নত করেনা। তাই ঈমানদার ব্যক্তিই বিনয়ী। তার রবের সামনে কাঁদতে সে লজ্জা পায় না। ভুলের জন্য ক্ষমা চাইতে কুন্ঠাবোধ করে না। সততার সাথে ক্ষমা চেয়ে দৃড়ভাবে সেই কাজ থেকে বিরত থাকে।

আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা বলেন, ‘যে তওবা করে এবং ঈমান আনে ও পুণ্য-পবিত্র ক্রিয়াকর্ম করে। সুতরাং তারাই, -- আল্লাহ্ তাদের মন্দকাজকে সৎকাজ দিয়ে বদলে দেবেন। আর আল্লাহ্ সতত পরিত্রাণকারী, অফুরন্ত ফলদাতা’।

[সূরাহ ফুরক্বানঃ ৭০]

আল্লাহ আমাদেরকে আমাদের জেনে না জেনে করা গুনাহগুলো থেকে ক্ষমা করে দিক ! আমাদেরকে সঠিকভাবে মনের অন্তঃস্থল থেকে অনুতাপ করার, ক্ষমা চাওয়ার সুযোগ দান করুক। আমাদেরকে নিজেদের ভুল বুঝার আর স্বীকার করে নিয়ে খারাপ কাজগুলো থেকে দূরে থাকার তওফিক দিক... আমীন।

আল্লাহর কুদরত

মিসরের এই ছোট বালকটির নাম শরীফ মুসতফা। বয়স যখন মাত্র ৭ তখন থেকেই শুরু এসব অলৌকিক কান্ড ঘটনা। মাত্র তিন মাসে পবিত্র
কুরআনের ৩০ পারা মুখস্ত করে ফেলে এই শিশু।
তারপর !
মাত্র ৪০ দিনে সে মুখস্ত করে ফেলে বুখারী শরীফ, মুসলিম শরীফসহ আরও কয়েকটি হাদীসের প্রামাণ্য গ্রন্থের ১১ হাজার
হাদীস। আরবী ব্যাকরণ শাস্ত্রের জটিল কিছু গ্রন্থও সে তার ভেতর
আয়ত্ত করে নেয়। এসবের মধ্যে উল্লেখ্য- তুহফাতুল আতফাল,
মাতনুল জাযরী, শাতেবী, দুররাহ, আলফিয়া ইবনে মালিক ইত্যাদী।
এখানেই শেষ নয়, সে তারপর মুখস্ত করে ফেলেছেণ পবিত্র কুরআনের
বৃহৎ তাফসীর তাফসীরে জালালাইনের প্রতিটি লাইন ও শব্দ। কুরআন
শরীফের এ বিস্ময়কর ধারক শিশুটি শুধু এক কেরাতে নয়,
পুরো কুরআন শরীফকে ১০ টি কেরাতে পড়ার পদ্ধতি সে আয়ত্ত
করে ফেলেছে মাত্র ৬ মাসে। কোথাও প্রতিযোগিতা হলেই সে হাজির
এবং প্রথম স্থান কেড়ে নিয়েই তবে সে বাড়িতে ফিরে আসে। এ
পর্যন্ত তার কাছে জমেছে মিশরের স্বনামধন্য আল আযহার
বিশ্ববিদ্যালয় এবং ওয়াকফ মন্ত্রণালয়েরসহ প্রায় ৭৫
টি সার্টিফিকেট। তার এমন অভূতপূর্ব মেধা দেখে আরব ও
মুসলিম বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশ তাকে পুরস্কার ও সম্মান
জানিয়েছে। এখন সে তার এলাকা এবং মিসরের বিভিন্ন
মসজিদে কুরআন ও ক্বেরাত সংক্রান্ত নানা বিষয়ে মানুষকে দ্বীন
শেখায়। আল্লাহ পাক তার এ কুদরতকে দীর্ঘজীবি করুন।

স্ত্রীর জন্য পাগলপারা এক স্বামীর গল্প বলছি... ♥♥♥


এক লোক,
সে ছিল তার স্ত্রীর জন্য পাগল, যদিও তাদের দাম্পত্য জীবনের এই ১০ বছরখুব মসৃন ও সবসময় সুখকর ছিল না। যখন তাকে জিজ্ঞেস করা হলো কেন সে তার স্ত্রীর মধ্যে এমন কি পেয়েছে যার জন্যসে তার
প্রশংসামুখর, সে বললঃ
" যখন থেকে আমাদের সংসারের শুরু, আমার অবস্থা যতই খারাপ হচ্ছিল, আমার স্ত্রীআরো বেশী বেশী করে অনুরোধ করছিল আমাকে নামাজ আদায় করার জন্য, কখনই সে এই নসিহত করা বাদ দেয় নাই।

বছরের পর বছর পার হয়ে গেলেও আমি তার এই কথার কোন মূল্য আর পাত্তা দেই নাই।
কিন্তু, যেদিন আমাদের ১০ম বিবাহ বার্ষিকীর দিন ঘনিয়ে এল আমি তাকে জিজ্ঞেস করলাম,
সে এবার উপহার হিসেবে কী পাওয়ার ইচ্ছা করছে আমার কাছে।

সে খুব সোজা ও সুন্দরভাবে উত্তর দিয়ে বলল,
"তুমি যদি আজ থেকে নামাজ পড়া শুরু কর তবে সেটাই হবে আমার জীবনের সবথেকে দামী উপহার পাওয়া"

আমি তাকে সেদিন আর না করতে পারি নাই, তার কথা ফেলে দিতে পারি নাই। তখন থেকেই আমি আমার নামাজের ব্যাপারে সচেতন এবং নিয়মিত, আলহামদুলিল্লাহ!

আমার জীবনের এত্ত সুন্দর একটা পরিবর্তনের কারন সেইই এবং আমি তাকে ভালবাসি।
আজো আমি দুঃখ করি যে আমার জীবনের কত মূল্যবান সময় অপচয় করেছি এই নামাজ না পড়ে"

এই ভাইয়ের জীবন থেকে আমাদের বোনেরা একটা শিক্ষা নিতে পারেন।
সেই সকল বোনদের বলছি, আপনারাই পারেন আপনার স্বামীর জীবনকে, আপনাদের জীবনকে জান্নাতমুখী করতে।

নামাজ, রোজাসহ ইসলামের যাবতীয় রীতি-নীতি মানতে আপনারাই আপনাদের স্বামীদের উৎসাহিত করতে পারেন।

এভাবেই আপনারা দুনিয়ার বস্তুবাদী উপহার না নিয়ে পেতে পারেন আখিরাতের জান্নাতের স্বাদ, জান্নাতি উপহার।

তাই আসুন দাম্পত্য জীবনকে করে তুলুন আখিরাত ও জান্নাত মুখী।

মনে রাখবেন, পৃথিবীর উপহার ক্ষণস্থায়ী,
কিন্তু পরকালের উপহার আল্লাহর পক্ষ থেকে এবং তা চিরস্থায়ী।

আল্লাহ সকলকে জান্নাতি ও পরহেযগার দাম্পত্যসংগী ও জীবন দান করুন,
আল্লাহুম্মাহ আমীন ♥♥♥

¤ খলীফার দায়িত্বশীলতা ¤

একদিন চলার পথে হযরত উমরের (রাঃ) সাথে এক বৃদ্ধার দেখা হল। কথা প্রসঙ্গে উমর (রাঃ) জিজ্ঞেস করলেন, 'আমীরুল মুমিনীন সম্পর্কে তোমার ধারণা কি?' বৃদ্ধা উমর (রাঃ) কে চিনতেন না। সে নির্বিঘ্নে বলল, 'সে মোটেও ভাল মানুষ নয়। আমি অতি কষ্টে আছি, খলীফা আমার কোন খবর নেয়নি।' উমর (রাঃ) বললেন, 'তুমি খলীফাকে তোমার অবস্থার কথা কেন বলোনি? তাঁকে না জানালে তিনি কি করে জানবেন?' বৃদ্ধা মহিলাটি বলল, 'খলীফার দায়িত্ব প্রজাদের খোঁজ খবর রাখা।' উমর (রাঃ) বললেন, 'হে মা! কি পরিমাণ অর্থ পেলে তোমার দুঃখ ঘুচবে আর তুমি খলীফাকে ক্ষমা করে দিবে?' সে সময় হযরত আলী (রাঃ) ও আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাঃ) সে পথ দিয়ে যেতে খলীফাকে 'আমীরুল মুমিনীন' বলে সম্বোধন করে সালাম দিলেন।

বৃদ্ধা মহিলাটি ভয়ে কেঁপে উঠলো। উমর (রাঃ) তাকে সান্ত্বনা দিয়ে ৫০০ স্বর্ণমুদ্রা তার হাতে তুলে দিয়ে বললেন, 'খলীফার বিরুদ্ধে তোমার আর কোন অভিযোগ আছে কিনা?' তিনি বললেন, 'না'। হযরত উমর (রাঃ) এক খন্ড চামড়ার উপর কথাটি লিখিয়ে নিলেন, 'কিয়ামতের দিন আল্লাহ তাআলার দরবারে আমীরুল মুমিনীন হযরত উমরের বিরুদ্ধে আমার আর কোন অভিযোগ নেই।' হযরত আলী তাতে সাক্ষিরূপে সাক্ষর করলেন।

এ ঘটনা সকল মানুষের জন্য বিশেষ করে দায়িত্বশীল লোকেদের জন্য দায়িত্বানুভূতির এক চিরন্তন আদর্শ।

আল্লাহ আমাদের সকলকে নিজ নিজ দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করার তৌফীক দান করুন।

আমীন।।

ধার্মিক এবং বিশ্বাসযোগ্য বউ পেতে হলে.....

১.পর্ন দেখা বাদ দেন।

২.একাকী সময় কাটানো কমান।

৩.নামায মিস দিয়েন না।

৪.প্রতিবার নামায পড়ে হবু বউ এর জন্য দোয়া করেন। যাতে আপনার হবু বউ (যদি কপালে থাকে) এবং আপনি পাপ থেকে দূরে থাকতে পারেন।

৫.একা একা অলস সময় কাটাবেন না।ছোট বড় যেকোন একটা কাজে নিজেকে ব্যস্ত রাখুন।

৬.বেশি বেশি আল্লাহকে স্মরন করুন। বলুন "ইয়া আল্লাহ,অশ্লীলতা থেকে বাচার জন্য আমি আপনার আশ্রয় চাচ্ছি"।

৭. মেয়েদের(হিজাবী বা নন হিজাবী যেকোন মেয়ে) দেখলে চোখ সরিয়ে নিন, বা মাথা নিচু রাখুন। একবার দেখলে দ্বিতীয়বার ঐদিকে তাকাবেননা। একটা গুনাহ্ কিন্তু আর একটা গুনাহের রাস্তা খুলে দেয়। কোন কিছু দেখার সময় আল্লাহর চোখ দিয়ে দেখবেন। মানে আল্লাহ অপছন্দ করেন এরকম জিনিসের দিকে তাকাবেন না।

৮.বেশি কামনা জাগলে ওযু করেন। মনোযোগ সহকারে নফল নামায আদায়করেন।নামাযে এবং নামাযের পর দোয়ার সময় কান্নাকাটি করেন। এই নামাযের মূল্য আছে ভাই।

৯. তওবা করেন। জানেন, যেকোন দোয়া কবুল না হওয়ার অন্যতম কারন একই গুনাহ্ বার বার করা।

১০. বেশী বেশী রোজা রাখেন...! বিভিন্ন কাজে আত্ননিবেশ করেন..! এইটাই এখন আপনার পরীক্ষা! ইসলাম আপনার নিয়মে চলে না!!! ইসলাম ইসলামের নিয়মে চলে...

৭০ হাজার মুমিন বিনা হিসাবে জান্নাতে যাবে .....

ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেন, নবী করীম (ছাঃ) বলেছেন, "..এক সময় আমার সামনে অতীতের সকল নবী ও উম্মতকে পেশ করা হল । অতঃপর আমি একজন নবী এবং তার সাথে একদল লোককে দেখলাম । তারপর আরেক জন নবীকে দেখলাম তার সাথে ১জন বা ২জন লোক রয়েছে । তারপর আর একজন নবীকে দেখলাম তার সাথে একজনও নেই ।

ইতিমধ্যে আমার সামনে একটি বড় দলকে পেশ করা হল । আমি মনে করলাম তারা যদি আমার উম্মত হত ! আমাকে বলা হল, তিনি মূসা (আঃ) এবং এগুলো তার উম্মত । তারপর আমাকে বলা হল আপনি লক্ষ্য করুন, একটি খুব বড় দল দেখলাম, আমাকে বলা হল এই হচ্ছে আপনার উম্মত । তাদের সাথে সত্তর (৭০) হাযার লোক রয়েছে যারা বিনা হিসাবে জান্নাতে যাবে এবং তাদের কোন শাস্তি হবে না ।

তারা এমন লোক যারা কোনদিন ঝাড়-ফুক গ্রহন করেনি, শরীরে উলকী লাগায়নি, কোন ব্যাপারে অশুভ ফল (অর্থাত্‍ তাবীয, পাথর, মাধুলী, সুতা, পানিপড়া ইত্যাদি) গ্রহন করেনি । বরং তারা তাদের প্রতিপালকের প্রতি পূর্ণ ভরসা রাখত... ।

- ( সহীহ বুখারী ২/৮৫০, মিশকাত হা/৫২৯৬)

ইসলামপন্থী মেয়ে!!!!!

যখন কোন ইসলামপন্থী(?) মেয়েকে বলতে শুনি,
--আমার বয়ফ্রেন্ডটা খুব ধার্মিক। সে নিয়মিত নামাজ পড়ে, কুরআন পড়ে। আই অ্যাম রিয়েলি প্রাউড অব হিম!
তখন আমি বলি,
-যে ছেলের একটা গার্লফ্রেন্ড থাকে। সে কি করে ধার্মিক হয়?

যখন কোন ইসলামপন্থী(?) ছেলেকে বলতে শুনি,
--আমার গার্লফ্রেন্ডটা ভীষণ ভালো! সে হিজাব পরে পর্দা পালন করে। সী ইজ রেয়েলি নাইস ওয়ান!
তখন আমি বলি,
-একটা হিজাব পরিহিতা পর্দাশীল মেয়ের আবার বয়ফ্রেন্ড থাকে কি করে?

যখন কোন একজনকে বলতে শুনি,
--শরীরের পোশাকটা জরুরি নয়। মনের পর্দাই বড় পর্দা।
তখন আমি বিষ্ময়ে হতবাক হই! নিজেদের সুবিদার্থে এরা কিভাবে ইসলামকে নিজের মত বানিয়ে নিচ্ছে!!!

প্রেমের নামে নারী পুরুষের অবাদ মেলামেশাকে ইসলাম সমর্থন করে না। যদি আপনি এই রোগে আক্রান্ত হন, তাহলে নিজেকে ইসলামপন্থী বলে পরিচয় দেবেন না।

যদি মনের পর্দাই আসল পর্দা হতো, তাহলে আল্লাহ তা'আলা কখনোই পর্দার বিধান দিতেন না।

ইসলাম তো মামার বাড়ীর আব্দার নয় যে, যার যেভাবে ইচ্ছা কাটছাট করে পালন করবেন!

মনে রাখবেন, ইসলাম আল্লাহ প্রদত্ত একমাত্র জীবন বিধান। এটাকে নিজের মত ব্যাখ্যা কিংবা কাটছাট করে পালন করে নিজেকে ইসলামপন্থী দাবি করার অধিকার আমাদের কারো নেই।

আল্লাহ আমাদেরকে পরিপূর্ণ ইসলাম বোঝার ও পালন করার তৌফিক দান করুন। (আমীন)

হাদীসে কুদসী

রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন,মহান আল্লাহ বলেনঃ “আমি কোন ব্যক্তির মুখের কথা কবূল করি না ; বরং আমি তার উদ্দেশ্য ও বাসনাই কবুল করে থাকি। তার ইচ্ছা ও প্রত্যাশা যদি আল্লাহ যা ভালবাসেন ও পছন্দ করেন তাই হয়; তবে তার উদ্দেশ্যকে আমি আমার প্রশংসা ও মর্যাদায় পরিবর্তিত করে দেই, যদিও সে কথা সে নাও বলে থাকে।”
-(হাদীসে কুদসী)